সহজ কথাও যায় বলা সহজে...

সহজ কথাও যায় বলা সহজে...

আন্দালিব পার্থ: আমি খুব বিনয়ের সঙ্গে আমার তিন ভাই-বোনের কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। বাংলাদেশ অনেক কিছুই করতে পারত। পারেনি এই কারণে যে, ভালো মানুষ রাজনীতিতে আসেনি তাই। আমরা ভারতের চেয়েও ভালো করতে পারতাম। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, রাহুল গান্ধীও ভারতের রাজনীতিতে ভালো কিছু করতে পারছেন না। আমরা যারা জাতীয় সংসদ সদস্য তাদের কেউ বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করি না। না ফেসবুক, না মিডিয়া, না নিউজপেপার না আমরা। আমাদের মধ্যম শ্রেণি উন্নতি করেনি। তারা এখনো নুড়ি কুড়ায়।গত ২০ বছরে আমাদের একজন রাজনীতিবিদের নাম বলেন যাকে আদর্শ মনে করা যায়। আপনি যদি এইচএসসি পাস করতেই না পারেন তাহলে চাইলেও ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবেন না। ’৯১ এর আগ পর্যন্ত আমাদের দেশে বড় বড় রাজনীতিবিদ ছিল। তারপর কে বোম মারতে পারবে, কে গাড়ি ভাঙতে পারবে, কে আদম সাপ্লাই দিতে পারবে তারাই হলো নেতা। ভালো ছেলে-মেয়েদের রাজনীতিতে আসতে হবে। লজ্জার ব্যাপার হলো এমন কেউ মন্ত্রী হয়েছেন যারা ফিঙ্গার বলকে স্যুপ মনে করে খায়। যিনি টিঅ্যান্ডটি মন্ত্রী তিনি তো অ্যাপল আই পড, ফেসবুক তো দূরের কথা এসএমএসও করতে পারেন না। সত্যি সেলুকাস! আমার কথা হলো ভালো জেনারেশনকে রাজনীতিতে আসতে হবে। আরেকটি কথা বলি, আমরা কি দিতে পারি কিংবা না পারি সেটা পরের কথা, মনি আপা, নাজমা আপা, রনি ভাই, মাহিন, পুলক, শাহরিয়ার, এ্যানি কিংবা আমাকে দেখেও যদি আরো অন্তত ৫০ জন মানুষ রাজনীতিতে আসে তাও দেশের মঙ্গল।
নিলোফার চৌধুরী মনি: আমাদের যখন যে সরকার, মন্ত্রী-মিনিস্টার হন। তারা সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়ান কিন্তু কাজের জন্য সময় না দিয়ে ব্যক্তিগত কাজেই ঘুরে বেড়ান। আনন্দ করেন। অতিথিপরায়ণতা দেখিয়ে সময় নষ্ট করে ফেলেন। বিদেশিরা কিন্তু কাজটাকে বেশি পছন্দ করেন। যেমন হিলারী ক্লিনটন বাংলাদেশে এসেছিলেন কাজে। তিনি কিন্তু কারো বাসায় গিয়ে খেলেন না। তাদের থেকে আমাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক শিখতে হবে। আমাদের দেশের মাটির নিচে নাকি অনেক কিছুই আছে। অথচ আমরা ১০ জন মানুষও তৈরি করতে পারিনি যে আমাদের মাটি দেখে বলতে পারবে সেখানে আসলেই কি আছে। আমরা সৃষ্টিশীল কাজের মধ্যে নেই। একটা গাড়ির কারখানা বিদেশিদের সাথে করতে পারিনি।
নাজমা আকতার: এবার জাতিসংঘে কিন্তু আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বশান্তির মডেল উপস্থাপন করেছেন। তিনি কিন্তু বেশ প্রশংসিতও হয়েছেন।
জিল্লুর রহমান: আমরা দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে যতই গর্ব করি না কেন বাস্তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে গেলে দেখা যায় আমাদের আসন পেছনের বেঞ্চে। যতটুকু জায়গা পাই তা আন্তর্জাতিক রাজনীতির বড় সুবিধার জন্য তারা করে দেন।
নাজমা আকতার: আমরা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সমানতালে চলতে পারছি না। তার মানে এই না যে, আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আমরা অনেক উন্নতি করছি। পার্শ¦বর্তী দেশ ভারতের অনেক অর্থনীতিবিদ আমাদের উন্নতির উদাহরণ দিচ্ছেন।
গোলাম মাওলা রনি: বিশ্বায়নের কথা যদি বলি, তাহলে দেখা গেল আমি নাসাতে যাব। সেখানে বাঙালি কোনো মানুষ পাওয়া যাবে না। কারণ তার শারীরিক ফিটনেস নাই। আকাশে যাওয়া সম্ভব নয়। অথচ ভারতে রেডিকেল পরিবর্তন।
আন্দালিব পার্থ: এইটার সাথে বিশ্বায়নের কী সম্পর্ক?
গোলাম মাওলা রনি: আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই সব সময় আমরা পাশের দেশ থেকে পিছিয়ে থাকব। জাতি হিসেবে আমরা অনেক অতিথিপরায়ণ। একই ভাষায় কথা বলি, একই খাবার খাই, একই আবহাওয়ায় থাকি। যার কারণে যে কোনো কাজকে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জাগিয়ে তুলতে পারি আবার ঐক্যবদ্ধভাবে নষ্টও করতে পারি। আমার চিন্তা-চেতনা, রুচিবোধ পৃথিবীর অন্য দেশের চেয়ে আলাদা।
জিল্লুর রহমান: আপনারা বাংলাদেশের মানুষ। দেশের নেতা। বিশ্বায়নের এই যুগে অন্যান্য দেশের তুলনায় নেতৃত্বের যোগ্যতায় অনেক পিছিয়ে আছেন। দেশের স্বার্থ আদায় করতে পারছেন না কেন?
আন্দালিব পার্থ: যে যা বলে বলুক। আপনি জবাব দিতে যান কেন? শুধু দেখবেন। বাড়তি কথা লিখলে আপনি আরো ঝামেলায় পড়বেন। আরো দশটি নেগেটিভ কমেন্ট পাবেন। আমাকে অনেকে লিখে পার্থ ভাই আপনি এই কাজটি ঠিক করেননি। আমার কিছু বলার দরকার নাই। আমি শিখলাম। সিদ্ধান্ত নিজের। আমার একটা স্ট্যাটাস-এ ৫০ হাজার কমেন্ট হয়। আমি কয়টার জবাব দেব। আমার মেয়েকে নিয়ে একটা ছবি আপলোড করলাম। দেখবেন সেখানেও অনেকে বাজে কমেন্ট করবে। ব্যক্তিগতভাবে ইনবক্স-এর অনেকে নানারকম কথা বলতে চায়। আমি মনে করি এমপি হিসেবেও আমাদেরকে মানুষ তুলনামূলক বেশি পছন্দ করে। আমাদের দেশে নির্বাচিত এমপি আছেন ৩০০ জন। তাদের কয়জনকে মানুষ নক করে। সুতরাং আমি ভাগ্যবান। নানাভাবে দুর্বল করার জন্য বিপরীত লিঙ্গের কেউ কেউ নক করবেই। এখন সেটা হ্যান্ডলিং করার দায়িত্ব আমার। আমি যদি তার সাথে পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গিতে আগাই দেখবেন তিনিই আমার ভালো বন্ধু হতে পারেন। ফেসবুকের মাধ্যমে আমাকে অনেকে ভালো তথ্যও দেয়। পার্থ ভাই সোনালী ব্যাংক কিন্তু খালি হয়ে গেল। পার্থ ভাই কোটা নিয়ে আপনাকে সংসদে বলতে হবে। আবার কেউ কেউ আমার কান ধরা ছবিও আপলোড করে। শাহবাগ-এ মারধর করে। আন্দালিবকে বলা হয় ধান্দালিব। একটি তথ্য দেই। ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে এত বাজেভাবে পৃথিবীর আর কোথাও ব্যবহার হয় না। তাই সরকারের উচিত ফেসবুক ব্যবহার করতে পারবে কারা, কোন বয়সে পারবে তার সবকিছুর একটা নীতিমালা তৈরি করে দেয়া।
নিলোফার চৌধুরী মনি: আপনি তো আর মেয়ে না। মেয়েদেরকে নিয়ে যেভাবে মানুষ জড়িয়ে কথা বলে। সাঈদির সঙ্গে আমার নাকি গভীর সম্পর্ক। অথচ তার সঙ্গে এখন পর্যন্ত আমার পরিচয়ই হয়নি।
আন্দালিব পার্থ: আমি প্রায় ৩ লাখ ফেসবুক ফ্রেন্ড হ্যান্ডেল করি। আমার মনে হয় এই ঘটনা বিরল। আমার একটা টিম আছে যারা এগুলো দেখাশোনা করে। আমার ৪২টি ফেইক আইডি আছে। মাঝেমধ্যে সেই আইডিতে কথা বলে আমি জানার চেষ্টা করি তারা কি চায়। সংসদের প্রথম বক্তৃতা আমাকে মানুষের কাছে বিশেষ পরিচিতি এনে দেয়। ইউটিউবে আমার বক্তৃতায় ২০ লাখ মানুষ হিট করে। ফেসবুক আমাকে অনেক গণতান্ত্রিক হতে শিখিয়েছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ গালি দিতেই পছন্দ করেন। আমি গণজাগরণ মঞ্চকে সমর্থন করিনি এই কারণে আমার অনেক বন্ধু আমাকে রাজাকার বলেছে। আমি তাতে দুঃখ পাইনি বরং শিখেছি।
নাজমা আকতার: আমাদের ছেলে হলো আমার আর স্বামীর পাহারাদার। আমাদের দুজনের ফেসবুক আইডিই আমার ছেলে জানে। একদিন আমার স্বামী একটি মহিলার সাথে চ্যাট করছিল। মহিলাটি জানাল তিনি দাঁতের ডাক্তার। তখন আমার স্বামী তাকে বলেছে, আমার দাঁত দেখাতে একদিন আসব। মহিলা বলেছে আসেন। আমার ছেলে তা দেখেছে। ছেলে আমাকে বলেছে আম্মু, আব্বুর দাঁতের কি সমস্যা? (সকলের হাসি)। বাবাকেও একই প্রশ্ন করে। ওর বাবা জানতে চায় কেন? ছেলে বলে তুমি তো ফেসবুকে তোমার বান্ধবীকে বলেছ দাঁত দেখাতে যাবা। ছেলে বাবাকে ফোর্স করে। বলে তুমি ওই ডাক্তার বন্ধুর একাউন্ট ব্লক করে দাও। তোমার আর দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগবে না।
গোলাম মাওলা রনি: শোনো, আমার কাছে যদি আসত তাহলে বুঝতে পারতাম নিজে কতটা সৎ। কিন্তু সেই সুযোগই হয়নি। একবার এক মহিলা ফোন করে তার পারিবারিক সমস্যার কথা জানাল। স্বামীর সাথে সমস্যা। আমাকে অনুরোধ করল সমাধান করে দিতে। তার স্বামী নাকি আমার খুব ভক্ত। আমি দুজনকেই অফিসে ডাকলাম। তাদেরকে বোঝালাম। একসময় তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হলো।
নাজমা আকতার: তুমি কী আগাতে চাও?
গোলাম মাওলা রনি: না, না। ইয়াং হলে খারাপ হতো না। বরং যারা কথা বলতে চায় তারা একটু মধ্য বয়স্ক, বুড়ি (সকলের হাসি)। আমার পরিবারের কথা জানতে চায়, সন্তানের কথা জানতে চায়। আমি বলি। তখন আর কথা বেশিদূর আগায় না।
নাজমা আকতার: যারা কথা বলে তারা তাহলে বেশিরভাগই ইয়াং?
গোলাম মাওলা রনি: না তেমন কিছু হয়নি। সেই রকম সম্পর্কের জন্য অবশ্য একটা স্ট্যান্ডার্ড দরকার। তেমন কাউকে পাইনি।
জিল্লুর রহমান: কেউ কখনো জান কোরবান করার কথা বলেনি?
গোলাম মাওলা রনি: আমার কিছু সিরিয়াস ফেসবুক ফ্রেন্ড আছে। যারা আমার লেখা কিংবা কথার সঙ্গে একমত হন না। তারা মনের মাধুরী মিশিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় বকাবকি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে আমার একটা বন্ধু সার্কেল ছিল বেশি। তখন আমি সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গেও যুক্ত ছিলাম। এমপি হওয়ার পর নানা ধরনের টকশো কিংবা অন্যান্য জায়গায় কথা বলতে হয়। অনেকে তা দেখে। ফেসবুকে মেয়েরাও কমেন্ট করে। কথা বলতে চায়। পার্থর মতো আমিও তাদেরকে ইসলামের কথা শোনাই (সকলের অট্টহাসি)।
নিলোফার চৌধুরী মনি: হয়তো বা। দেখেন মানুষ যদি বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক তৈরি করে সেজন্য দুই পক্ষেরই সমর্থন দরকার। আল্লাহর রহমতে আমার চলাফেরা, কথা-বার্তার মধ্যে এমন কোনো ইঙ্গিত নেই যার জন্য এই বয়সে কেউ আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেবে।
আন্দালিব পার্থ: মনি আপাকে হয়ত কারো চোখে তেমন সুন্দর লাগেনি। হা হা হা (সকলের হাসি)।
নিলোফার চৌধুরী মনি: না। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রস্তাব আমি পাইনি।
জিল্লুর রহমান: (রসিকতার সুরে) কোনো তরুণ কিংবা যুবক আপনাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়নি?
নাজমা আকতার: এখনকার ছেলেমেয়েরা আসলেই অনেক বোঝে। দেখা গেল কোনো একটা টিভি চ্যানেলের টকশোতে যাব। ছেলে বলল, আম্মু যাওয়ার আগে আজকের তথ্যগুলো জেনে যাও যাতে ভালো করে বলতে পারো।
গোলাম মাওলা রনি: আমরা তো যৌথ পরিবারে আছি। অনেক ভাই-বোন। দেখা যায় আমার ছেলেমেয়ের প্রতি আমার যতটুকু প্রভাব তারচেয়ে বেশি আমার ভাই-বোনের। আমার ছোট ছেলে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে। আমার অন্য ছেলে-মেয়েরা রাজনীতি পছন্দ না করলেও ছোট ছেলে খুব পছন্দ করে। আমি জানতে চাইলে বলে, এই যে তোমাকে কত মানুষ সালাম দেয়, সম্মান করে। তুমি মন্ত্রী হলে আরো ভালো। দেখেন, আমার পরিবারে একই জায়গায় দ্বৈতমত। আমার স্ত্রী শুরুর দিকে আমার রাজনীতি পছন্দ করত না। এখন করে। ইদানীং দেখা যায় কোনোদিন যদি বাসায় লোকজন কম হয় সেদিন তার মন খারাপ থাকে। চা-পানি খাওয়াতে পারল না। পরে আবিষ্কার করলাম, ছেলে-মেয়েরা তো এখন বড় হয়ে গেছে। দেখা যায় মায়ের বেশিরভাগ কাজই তাদের পছন্দ হয় না। সমালোচনা করে। অথচ এলাকার লোকজন আসলে এমপি সাহেবের বউকে তারা সালাম দেয়। সম্মান করে। ভাবীর অনেক কাজের প্রশংসা করে। সে আবার ছেলে-মেয়েদের দেখিয়ে দেখিয়ে এলাকার লোকজনদের নানা কাজে পরামর্শ দেয়। আসলে মানুষ সবাই নিজের প্রশংসা শুনতে পছন্দ করে।
নাজমা আকতার: অবশ্যই বদলাচ্ছে। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের ছবি টিভিতে দেখে আমার ছেলে আতংকিত। আমাকে বলে, আম্মু এটা কি করে সম্ভব? কেন ছাত্রলীগ বাতিল করে দিচ্ছে না। এটা কি করে হলো। তুমি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করো, মন্ত্রীকে বলে ওদের তুমি ধরিয়ে দাও। ওর ধারণা আমি চাইলেই সবাইকে ধরিয়ে দিতে পারি।
জিল্লুর রহমান: তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে, পরিস্থিতি বা সময়টা বদলাচ্ছে।
নাজমা আকতার: সম্প্রতি সংসদে আমি বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং পার্থর বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিয়েছিলাম। আমার ছেলে টিভিতে সেই বক্তৃতা শুনে আমার উপর রাগ করেছে। আমার বক্তৃতা তার পছন্দ হয়নি। বাসায় আসছি। সে দরজা খুলে দিয়েছে কিন্তু আমার সাথে কথা বলেনি।
আন্দালিব পার্থ: (হাসতে হাসতে) মনি আপা আপনি কিন্তু এখনো ঠিক হলেন না।
নাজমা আকতার: এখানেও যদি সংসদের মতো কথা বলেন তাহলে তো হবে না।
নিলোফার চৌধুরী মনি: তার মা যে তারচেয়েও এক ধাপ এগিয়ে তা কি সে বোঝে? হা হা হা (সকলের অট্টহাসি)। ছেলের কাছে নাজমা আপার বক্তৃতা রেকর্ড করে শোনালে বুঝবে যে মায়ের কাছে বিএনপির আন্টিরা কিছুই না (আবার সবার হাসি)।
নাজমা আকতার: আমার একটা ফেসবুক একাউন্ট আছে। একবার দেখি আমার ছেলে সেই আইডি বন্ধ করে দিয়েছে। কারন হিসেবে আমাকে জানাল, তোমার এক ছেলে ফেসবুক বন্ধু তোমার রাজনীতির নিয়ে বাজে কথা বলেছে। আবার কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে কেউ একজন আমাকে রোমান্টিক কোনো কথা বলেছে। সেটা দেখে আমার ছেলে তাকে ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে ব্লক করে দিয়েছে। রাজনীতির বিষয় ওর ধারণা নেগেটিভ। ওর ধারণা আমরা বুঝি সারাক্ষণ ঝগড়া-ঝাটি করি। একে অপরের সমালোচনা করি। কিছুদিন আগে আমার নির্বাচনী এলাকা রামগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর গিয়েছিলাম ওকে নিয়ে। সেখানে আমার নানান কাজের ব্যস্ততা, দলীয় লোকজনের সংবর্ধনা সবই ওর ভালো লেগেছে। সবকিছু দেখে বলল, আম্মু তুমি তো অনেক কাজ করো। সে আবার তারানা হালিম আর আন্দালিব পার্থর বক্তৃতা শুনতে পছন্দ করে। আমাকে মাঝে মাঝে বলে তুমি তাদের মতো কথা বলতে পার না। আমাকে উপদেশও দেয়। তুমি সংসদে এভাবে কথা বলবা। আর বিএনপির আন্টিরা যেভাবে বলে সেভাবে বলবা না।
নিলোফার চৌধুরী মনি: আমার বড় মেয়ে এখন রাজনীতি বোঝে। তার ধারণা সবমিলিয়ে বাংলাদেশ খুব একটা ভালো নাই। রাজনীতিবিদদের তারা খুব একটা পছন্দ করে না। তবে মাকে পছন্দ করে।
আন্দালিব পার্থ: আমার মেয়ে ক্লাস থ্রিতে পড়ে। ও একদিন আমাকে প্রশ্ন করল, বাবা তুমি আমাকে স্কুলে আনতে যাও না কেন? আমি তাকে বোঝালাম যাদের কোনো কাজ নাই তারা বাচ্চাদের আনতে স্কুলে যায়। সে বিশ্বাস করে। একসময় সে ইন্টারনেটে তার বন্ধুদেরকে আমার ছবি দেখিয়ে বলেছে এইটা আমার বাবা। তারা ছবি দেখে বলে, এ তো পার্থ। রাজনীতি করে। এ তোমার বাবা হতেই পারে না। সে তোমার কাজিন। এই কথা শুনে আমার মেয়ে খুব চিন্তিত হয়। তারপর আমি আমার মেয়েসহ একটা ছবি ফেসবুকে আপলোড করি। ওর বন্ধুরা দেখে বিশ্বাস করে আমিই তার বাবা। এখন সে বোঝে আমি রাজনীতি করি। এখন সে বোঝে আমি বিরোধী দল আর প্রধানমন্ত্রী সরকারি দল।
জিল্লুর রহমান: আপনাদের রাজনৈতিক জীবন ছেলে-মেয়েরা কেমন উপভোগ করে?

Talk Show


নাজমা আকতার: আপনারা পুরুষরা কিন্তু আরো বেশি বলেন, আমি না থাকলে তোমার যে কি হতো! গোলাম মাওলা রনি: আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষে পড়ি তখনই একটা টার্গেট করে প্রেম করেছিলাম। ছোটবেলা থেকেই কেন যেন প্রেম করার চেয়ে আমার বিয়ে করার শখ ছিল। সেই উদ্দেশ্য থেকেই প্রেম অতঃপর বিয়ে। তো যখন বিয়ে করি তখন কিন্তু আমরা দুজনই ছাত্র। বেকার। কোনো কাজ না থাকায় দেখা যেত আমরা ছোট-খাট ব্যাপার নিয়েও ঝগড়া করতাম। দুষ্টুমি করে ঝগড়া করলেও একসময় দেখা যেত সত্যি সত্যি ঝগড়া করছি। বর্তমানে আমাদের বিয়ের বয়স ২৭ বছর। আমাদের তিন ছেলে-মেয়ে। ওরা এখন বড় হয়ে গেছে। তাই আমাদের স্বামী-স্ত্রীর এখনকার আলোচনা হয় বস্তুগত। তারপরও দেখবেন প্রত্যেক স্বামী কিংবা স্ত্রীর এমন কিছু বিষয় থাকে যা সারা জীবনেও কেউ পছন্দ করে না।
আন্দালিব পার্থ: আমরা সেটা মানি কিন্তু এতকিছুর পরও আপনারা বলেন, আমি ছিলাম বলেই সংসার করতে পারলা।
নিলোফার চৌধুরী মনি: আমরা নারীরা যারা রাজনীতি করি তাদের কিন্তু দুইদিকই সামলাতে হয়। শুক্র-শনিবার বন্ধের দিনে স্বামীর কোন জামা-কাপড় ময়লা হয়েছে কিংবা বাচ্চা-কাচ্চার যেকোনো সমস্যা আমাদেরকেই দেখতে হয়।
আন্দালিব পার্থ: আমি একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই। যেকোনো সাকসেসফুল পুরুষের পেছনে তার স্ত্রীর অবদান অনেক বেশি। স্ত্রীর ভূমিকা না থাকলে কোনো পুরুষই তার কাজে সাফল্য পাবে না।
নাজমা আকতার: মনি আপার কথার সঙ্গে একমত হয়ে বলতে হয় সংসারে কিন্তু আমরা অনেক কাজই করি। বাইরে যতই রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকি না কেন। সংসারের দায়িত্ব আমাদের উপরই।
আন্দালিব পার্থ: কিছু কৌশলও মাঝেমধ্যে অবলম্বন করতে হয়। যেমন দেখা গেল কোনো কারণে আমার স্ত্রী রাগ করল তখন আমি তাকে ধর্মের কথা শোনাই। যেহেতু সে নিয়মিত নামাজ আদায় করে তাই ধর্মের কথা বললে একটু নরম হয় (সকলের অট্টহাসি)।
নাজমা আকতার: ঝগড়া যে হয় না তা বলা যাবে না। তবে দেখা গেল কোনো কারণে আমি ওর উপর রাগ করেছি তখন কোনো কথা না বলে চুপ থাকি। পরে আস্তে আস্তে বিষয়টা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
জিল্লুর রহমান: তার মানে কি আপনাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া হয় না?
আন্দালিব পার্থ: না আমাদের মধ্যে ওই রকম ভয়-ভীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আমার মা একজন সমাজকর্মী। ছোটবেলা থেকে পরিবারের সবাই রাজনীতির মধ্যেই বড় হয়েছি। আমার স্ত্রীও তাই। আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমাদের তিন ভাইর মধ্যে সবার ছোট অঞ্জনই আমাদের পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনা করে। মেজ ভাই শান্ত পিএইচডি শেষ করে চাকরি করছে। আমার স্ত্রী আমাদের দুই সন্তানের দেখভাল করে। আমরা সংসারের সব ব্যাপার নিয়েই আলোচনা করি।
জিল্লুর রহমান: আচ্ছা, পার্থ কি তার স্ত্রীকে ভয় পান?
নাজমা আকতার: আমার স্বামী সরাসরি রাজনীতি করত না। সে নিজে কিছু করে বড় হতে চাইত। মানে নিজের পায়ে দাঁড়ানো। তবে সে চাইত আমি যেন কোনো চাকরি না করি। একবার বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষার জন্য মনোনীত হই। কিন্তু আমার স্বামী মৌখিক পরীক্ষা দিতে দেননি। তখনো কিন্তু আমাদের বিয়ে হয়নি। তার কথা হলো বিসিএস-এ টিকে গেলে চাকরি নিয়ে তুমি এক প্রান্তে আর আমি আরেক প্রান্তে থাকব। তারচেয়ে রাজনীতি করো তাই ভালো। এই কারণে স্বামীর উপর আমার বাবার প্রচণ্ড রাগ ছিল। এখন তো সে সবই স্মৃতি। সংসারে আমাদের দুজনেরই সমান কর্তৃত্ব। ভালোবাসা আর ভয় দুটোই কাজ করে। কিছু কিছু সময় অবশ্য আমার স্বামী আমাকে ভয়ও পায়। (সবার অট্টহাসি)।
আন্দালিব পার্থ: আমারও তো পুরো পরিবারই আওয়ামী লীগের হা হা হা (হাসি)।
নাজমা আকতার: (মিষ্টি প্রতিবাদের সুরে) এটা মিথ্যে তথ্য। তার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগ করে। তার ৩ ভাই সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল।
নিলোফার চৌধুরী মনি: আমি একটু বলি। নাজমা আপা কিন্তু ছাত্রদলের ছেলে পটিয়ে নিয়ে গেছেন।
নাজমা আকতার: আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ’৮৯-এর ছাত্র সংসদে রোকেয়া হলের জিএস থাকাকালীন সময় আমার স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়।
জিল্লুর রহমান: এবার নাজমা আকতার বলুন। আপনি তো একদিকে সংসদ সদস্য অন্যদিকে আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সভানেত্রীও। বাইরের এত ব্যস্ততার মধ্যে ঘরে কীভাবে সময় দেন?
নিলোফার চৌধুরী মনি: আমার ঘরের অবস্থা একদমই স্বাভাবিক। স্বামীর ভাবটা এমন যে, তুমি যত বড় মন্ত্রী-মিনিস্টার কিংবা নেতা হও না কেন, ঘরে এলে তুমি আমার বউ। আমার সন্তানের মা। আমিও তার সঙ্গে একমত। প্রত্যেক মানুষের বিয়ের পর আমার মতে বড়জোর দুই বছর হানিমুন সময় থাকে। তারপর পুরোপুরি সংসার, বাচ্চা-কাচ্চা তাদের স্কুলে নেয়া এইসব নিয়েই ব্যস্ত হয়ে যেতে হয়। ব্যক্তিগত জীবনে আমি কিন্ত সংসারেও আমার স্বামীর চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছি। বিজ্ঞাপনের মতো বলতে হয়, রাজনীতি করি ঠিক আছে আমরাও তো মানুষ।
জিল্লুর রহমান: (মনি ও নাজমাকে উদ্দেশ্য করে) বলা যায় বাংলাদেশ বর্তমানে নারীশাশিত রাষ্ট্র। ঘরে-বাইরে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সংসদে সব জায়গাতে নারীর আধিপত্য লক্ষ্য করা যায়। আপনারা যারা নারী সাংসদ আছেন তারা তো বাইরে অনেক ক্ষমতাধর এবং শক্তিশালী। নিজের ঘরে আপনাদের অবস্থান কেমন? অর্থাৎ জীবনসঙ্গীর উপর কতটুকু খবরদারি করেন?
আমি এও দেখেছি খুব সম্মানিত একজন মানুষ কিন্তু খাবারের টেবিলে বসে নোংরাভাবে শব্দ করে খাবার খাচ্ছেন। অনেক সময় এমনও দেখেছি কোনো কোনো সম্মানিত সংসদ সদস্য সংসদের বাথরুমে গিয়ে বাথরুম এমন নোংরা করেছেন যে, আমি যাওয়ার পর বাথরুম থেকে বের হয়ে আসতে হয়েছে। এই বিষয়গুলোও একজন রাজনীতিবিদ কিংবা যে কেউ হোক না কেন খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ব্যক্তির আচরণই প্রমাণ করে তিনি কেমন।
গোলাম মাওলা রনি: আমার মনে হয় একজন রাজনীতিবিদের পোশাক-আশাকের প্রতি নজর দেওয়া নিজের জন্য যতটা না জরুরি তারচেয়ে বেশি জরুরি জনগণের জন্য। যেমন আমি খুব দামি একটা পোশাক পরলাম কিংবা দামি ব্র্যান্ডের পারফিউম গায়ে মাখলাম। অথচ আমি যে সমাজে চলাফেরা করি সেখানে গ্রহণযোগ্য হলাম না। সমাজে যারা সুপারম্যান আছেন তারাও কিন্তু দেখবেন কিছু স্টাইল প্রচলন করেছেন। যেমন বঙ্গবন্ধুর কোট, জিয়াউর রহমানের সাফারী সেট। আমরা যেহেতু সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করি তাই খেয়াল রাখতে হবে, রাস্তায় চলার সময় আমার ঘামের গন্ধে যেন কেউ বিরক্ত না হন। সুন্দর একটি জামা পরে আসছি কিন্তু কোন সময় যে সে কাপড়ে কাকের বিষ্ঠা লেগেছে সেটা খেয়াল করিনি। অনেক বড় মাপের মানুষকে দেখেছি তার চোখের কোণায় ময়লা লেগে আছে। জনসম্মুখে বসে কেউ কেউ নাকের লোম ছিড়ছেন, কারো দাঁতের মধ্যে ভাত লেগে আছে সেটা কাঠি দিয়ে অশোভন কায়দায় বের করছেন। ব্যাপারগুলো সাধারণ মানুষের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
আন্দালিব পার্থ: একজন পায়জামা-পাঞ্জাবি পরেও অনেক সুন্দর করে সাজতে পারেন। আবার সুন্দর শার্ট-প্যান্টও হতে পারে। যেমন রনি ভাই (গোলাম মাওলা রনি), তার সুন্দর আর মার্জিত পোশাকই তাকে অনেক সুন্দর করে তোলে।
নাজমা আক্তার: রাজনীতি করলেই যে ফ্যাশনাবল হওয়া যাবে না তা কিন্তু নয়। তবে অবশ্যই ফ্যাশনটা মার্জিত হতে হবে। আবার সেই ট্রিপিক্যাল বাঙালির মতো ফুল হাতার ব্লাউজ কিংবা সব সময়ই মাথায় ঘোমটা পরে থাকতে হবে তেমন কোনো কথা নেই। সময়ের প্রয়োজনে লাইফস্টাইলের সঙ্গে মিল রেখেই আমি আমার স্টাইল করব।
আন্দালিব পার্থ: আসলে তা নয়। আমি মনে করি রাজনীতি হলো টোটাল একটা প্যাকেজ। একজন রাজনীতিবিদের রুচি, পোশাক-আশাক, স্টাইল সবকিছুই কিন্তু মানুষ খেয়াল করে। বিশ্বের বড় বড় রাজনীতিবিদ যেমন- জন এফ কেনেডি, বিল ক্লিনটন, বারাক ওবামা কিংবা বাংলাদেশের শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, পাকিস্তানের ইমরান খান সবাই কিন্তু ফ্যাশনাবল ছিলেন।
নিলোফার চৌধুরী মনি: (রসিকতার সুরে) অনেকেই হয়ত জানেন না পার্থর পোশাকের ক্ষেত্রে আলাদা ডিজাইনারও আছেন...
জিল্লুর রহমান: বয়স, বাচন ভঙ্গি সুন্দর চেহারাসহ নানা কারণে কেউ কেউ আপনাকে তারকা রাজনীতিবিদ বলেন। আপনার বক্তব্য কী?
ব্যারিস্টার আন্দালিব পার্থ: আমি পেশাগতভাবে একজন আইনজীবী। বাস্তবতা হলো একাধারে ৪ বছর আইন পেশায় থেকেও কেন জানি আমি পেশাটা উপভোগ করিনি। তবে ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির প্রতি ঝোঁক ছিল। কারন রাজনীতির আবহেই আমি বড় হয়েছি।
জিল্লুর রহমান: সমাজের সকল শাখার সাকসেসফুল মানুষই আনন্দ আলোর চোখে তারকা। আপনারা সবাই তরুণ রাজনীতিবিদ এবং সাংসদ। অনেক তরুণ-তরুণীর আইডল। রাজনীতিবিদ না হলে কী হতেন?
দুই রাজনৈতিক দলের ৪ জন তরুণ সংসদ সদস্য যথাক্রমে আওয়ামী লীগের গোলাম মাওলা রনি, নাজমা আক্তার, ১৮ দলীয় জোট নেতা আন্দালিব পার্থ ও বিএনপি নেতা এডভোকেট নিলোফার চৌধুরী মনি। টিভি পর্দায় তর্কযুদ্ধে ‘কেহ কারো নাহি ছাড়ি সমানে সমান’ এই মনোভাব (কখনো যদ্ধংদেহী) দেখালেও বাস্তবে পরস্পরের প্রতি অনেক আন্তরিক। আনন্দ আলোর ঈদ সংখ্যায় প্রকাশের জন্য তাদেরকে নিয়ে এক আড্ডার আয়োজন করা হয়েছিল। আড্ডা শুরুর আগে ৪ তরুণ নেতাই তাদের পরিবারের নানা প্রসঙ্গ তুললেন। বোঝা গেল পর্দায় তর্ক করলে কি হবে বাস্তব জীবনে অনেক ভালো বন্ধু তারা। দেশ-এর প্রতি পরম মমতা তাদের। আনুষ্ঠানিক আড্ডা শুরুর আগে তারা যতবারই দেশের কথা বলছিলেন ততবারই শোনা যাচ্ছিল অভিন্ন সুর, অভিন্ন কণ্ঠ -দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আনুষ্ঠানিক আড্ডায়ও দেশের প্রতিই পরম মমতা দেখালেন ৪ আলোচিত তরুণ রাজনৈতিক নেতা। তাদের কথায় মনে হলো সহজ কথাও যায় বলা সহজে। তারই কিছু অংশ আনন্দ আলোর পাঠকদের জন্য পত্রস্থ করা হলো। সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন তৃতীয় মাত্রার পরিচালক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান। আরও ছিলেন আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমান। গ্রন্থনা করেছেন- রেজাউল হক রেজা
তারা এলেন স্বল্প সময়ের ব্যবধানে। একসাথেই বলা যায়। টিভি পর্দায় তাদেরকে ঘন ঘন দেখা যায়। জনগণের স্বার্থে কথা বলেন। কিন্তু টিভিতে তাদের কথা শুনে প্রায়শই মনে হয় তারা কি কথা বলছেন নাকি ঝগড়া করছেন। কেউ কেউ এর নাম দিয়েছেন ঝগড়া সংস্কৃতি। কিন্তু টিভি পর্দার মানুষগুলোকে বাস্তবে দেখে মোটেই ঝগড়াবাজ বলে মনে হলো না। বাস্তবে তারা পরস্পরের প্রতি অনেক আন্তরিক, বন্ধুভাবাপন্ন। চ্যানেল আইতে তৃতীয়মাত্রার আলোচিত পরিচালক জিল্লুর রহমানের রুমে ঢুকেই একজন অন্যজনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন। সংসদে কে কবে কাকে কথার ফুলঝুড়িতে ধোলাই করেছেন, কার বক্তব্যের কি প্রতিক্রিয়া হয়েছে তা নিয়ে মধুর সংলাপ শুরু হলো।